মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন

খালেদা জিয়ার জীবন ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে : কায়কোবাদ

  • আপডেট এর সময় : শনিবার, ৫ অক্টোবর, ২০২৪
  • ৩৭ বার পঠিত হয়েছে

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী কাজী শাহ মোফাজ্জল হোসাইন কায়কোবাদ বলেছেন, আজ গর্ব করে বলতে হয়, আমাদের আপোষহীন নেত্রী তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। তিনি শুধু জেল খাটেননি, তাকে অসুস্থ করে দেওয়া হয়েছে।

তিনি বলেন, তাকে অসুস্থ করে দেওয়া হয়েছে। যেন আর তিনি রাষ্ট্র পরিচালনা ও রাজনীতি করতে না পারেন। তার জীবনকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। এর বিচার অবশ্যই করতে হবে।

শুক্রবার (৪ অক্টোবর) বাদ জুমা কাতারে একটি তারকা হোটেলে বাংলাদেশি প্রবাসীদের এক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি। গত জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার আন্দোলনে যারা প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন তাদের রুহের মাগফিরাত এবং আহতদের জন্য দোয়া কামনা করেন। সে সঙ্গে অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের নির্বাচিত সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জানান।
হাফেজ হেমায়েত উল্লাহর সভাপতিত্বে ও মাওলানা শরীফ মাহমুদের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন খোরশেদ আলম ভূঁইয়া, জুয়েল রানা, সজীব আলম প্রমুখ।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান প্রসঙ্গে কায়কোবাদ আরও বলেন, তার ওপর গত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে কী রকম অত্যাচার করা হয়েছে তা সবাই জানে। অসুস্থ শরীর নিয়ে তিনি হাঁটতে ও চলতে পারেন না, তারপরও তাকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতন করা হয়েছে। অসুস্থ অবস্থায় বিদেশে গেছেন। তাকে আল্লাহ হেফাজত করেছেন। তিনি যথেষ্ট ধৈর্য ধরেছেন। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে নেতৃত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। আমরা তার কাছে কৃতজ্ঞ। সবাই দোয়া করবেন আল্লাহ যেন তাকে সুস্থ অবস্থায় দেশে ফিরিয়ে এনে নেতৃত্ব পুরোপুরিভাবে পরিচালনার তৌফিক দেন। বিশেষ করে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া করবেন। তার মতো নেতা যেন তারেক রহমান হতে পারেন। জিয়া ছিলেন সৎ ও নিরহঙ্কারী। তার আদর্শ বাস্তবায়ন করলে বাংলাদেশ দুর্নীতিমুক্ত হবে ইনশাআল্লাহ।

তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময় এবং পরিশ্রমের মাধ্যমে আজকে আমাদের স্বাধীন বাংলাদেশ। অতীতেও আমরা স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু ওই স্বাধীনতা আমাদের কথা বলার সুযোগ দেয়নি, মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর সুযোগ দেয়নি। অসংখ্য নেতাকর্মী আছেন যাদের বিরুদ্ধে দুই-তিনশ এমনকি চারশর মতো মামলা হয়েছে। বিশ্বের কোনো দেশে নজির নেই যেখানে একজনের বিরুদ্ধে এত মামলা দেওয়া হয়! আমি নিজেও ১৩ বছর ধরে মিথ্যা মামলায় দেশের বাইরে। তবে আজকে অনেকেই মুক্তি পাচ্ছেন। আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমান মুক্তি পেয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ।
কায়কোবাদ বলেন, আজকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কী ষড়যন্ত্র হয়েছে সবাই জানেন। তাকে কীভাবে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। তাকে বেইজ্জতি করা এবং জেলে ঢুকানোর জন্য কত অত্যাচার-অবিচার, জুলুম এবং মিথ্যা মামলা হয়েছে। কিন্তু আল্লাহ তাকে হেফাজত করেছেন। ড. ইউনূস একজন স্বনামধন্য ব্যক্তি। শুধু বাংলাদেশেই নন, সারা বিশ্বে তিনি সমাদৃত। তার মতো বরেণ্য ব্যক্তিকে যদি মিথ্যা মামলা দিয়ে জুলুম-নির্যাতন করতে পারে, আমাদের করবে না কেন?

তিনি আরও বলেন, আমাদের মহাসচিব, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিবসহ অনেকেই একাধিকবার জেল খেটেছেন। স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদলসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা জেল খেটেছেন। এত বড় জুলুম-অত্যাচার আর পৃথিবীর কোথাও হয়েছে কি না জানি না। ছোট ছোট ছাত্র ভাইয়েরা এবং অন্য দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষ যেভাবে সহযোগিতা করেছে, ঢাকা শহরের মানুষ ঘর থেকে বেরিয়ে এসেছে- তা ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। ছাত্রসমাজের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। আমি ছাত্র ভাইদের বলব, চিন্তা করে সাবধানে চলতে হবে। কারণ চক্রান্তকারীরা আন্দোলনের ফসল নষ্ট করতে চায়। সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
কাজী কায়কোবাদ বলেন, জুলুমকারীদের প্রাথমিক বিচার আল্লাহ করেছেন। কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে কিন্তু এভাবে পালিয়ে যেতে হয়নি। বাংলাদেশের জালেম সরকারকে ভয়ে পালিয়ে যেতে হয়েছে। এখান থেকে আমাদেরও শিক্ষা নিতে হবে। আমরা যদি কোনো ভুল বা অপরাধ করি তাহলে আমাদের পরিণতিও এমনটাই হবে। বাংলার জনগণ অন্যায় সহ্য করতে পারে না।

পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ