গাজার পর এবার লেবাননে অভিযান শুরু করেছে ইসরায়েল। দেশটিতে একের পর এক হামলা চালিয়ে আসছে তারা। গত ২৪ ঘণ্টায় লেবাননে ১৫০টির বেশি নিশানায় হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)।
রোববার (০৬ অক্টোবর) ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইসরায়েলের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আইডিএফ জানিয়েছে, স্থল অভিযান চলাকালে রোববার তারা লেবাননের প্রতিরোধ যোদ্ধাদের ১৫০টির বেশি নিশানায় হামলা চালিয়েছে। এছাড়া তারা হিজবুল্লাহর শক্ত ঘাঁটি দাহিয়েহের বেশ কয়েকটি ভবনের কাছাকাছি বেসামরিক লোকদের জন্য আরও সরিয়ে নেওয়ার আদেশ জারি করেছে। এ এলাকাটি লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত।
সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, প্রতিরক্ষা বাহিনীর ৯৮ এবং ৩৬ ডিভিশনের সঙ্গে সেনারা অভিযান চালিয়ে অস্ত্রাগার টানেল ও হিজবুল্লাহর অন্যান্য স্থাপনা ধ্বংস করে দিয়েছে। লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামে এ হামলা চালানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ দিন হিজবুল্লাহর সেনাদের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘর্ষ হয়েছে। এছাড়া তাদের ও তাদের স্থাপনাকে লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়েছে।
এদিকে বিবিসির এক বিশ্লেষনে বলা হয়েছে, সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে মধ্যপ্রাচ্য। গত এক বছরে বিশ্বে অনেক বিপদের মুহূর্ত এসেছে। তবে এবারেরটি সব চেয়ে ভয়াবহ। গত সাত দিনের মধ্যে লেবাননের সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর নেতা হাসান নাসরুল্লাহ নিহত হয়েছেন। লেবাননে স্থল হামলা শুরু করেছে ইসরায়েল। ইরান প্রায় ২০০ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইসরায়েলে। তেহরানে পাল্টা হামলা চালানোর ঘোষণা দিয়েছে তেল আবিব।
যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা ও আঞ্চলিক শক্তিগুলো উত্তেজনা কমানোর জন্য চাপ দিচ্ছে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত সংঘাত বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে।
শিল্পোন্নত দেশগুলোর জোট জি-৭–এর পক্ষ থেকে সব পক্ষকে ধৈর্য ধরতে বলা হয়েছে; কিন্তু এখন পর্যন্ত সব প্রচেষ্টা ব্যর্থ। আগের যে কোনো সময়ের চেয়ে মধ্যপ্রাচ্য সর্বাত্মক যুদ্ধের দ্বারপ্রান্তে চলে এসেছে। গত এক সপ্তাহে ঘটে যাওয়া এসব ঘটনার কারণে মূলত এ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।
হিজবুল্লাহর প্রধান হাসান নাসরুল্লাহকে হত্যায় লেবাননের বৈরুতে গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ইসরায়েল বোমা হামলা চালায়। সেখানে ব্যাপক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। অনেক আবাসিক ভবন ধসে পড়ে। মাটিতে বড় গর্ত সৃষ্টি হয়। আকাশ ধুলাবালি ও ধোঁয়ায় ভরে ওঠে। পুরো লেবানন থেকে ওই দৃশ্য দেখা যায়। এ হামলা হয় মাটির নিচে থাকা হিজবুল্লাহর বাংকার লক্ষ্য করে। এ হামলায় নিহত হন হিজবুল্লাহ নেতা হাসান নাসরুল্লাহ। ইসরায়েলের এক সপ্তাহ ধরে চালানো হামলায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হওয়ার পর নাসরুল্লাহর মৃত্যুর খবর আসে।
তারও এক সপ্তাহ আগে এই সশস্ত্র গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে পর পর অসংখ্য ওয়াকি-টকি এবং পেজার বিস্ফোরণ ঘটনো হয়। এতে কমপক্ষে ৩২ জন নিহত এবং তিন হাজার জনের বেশি মানুষ আহত হয়েছিল।