মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের সময় যতে ঘনিয়ে আসছে, ততই বিবেচ্য হয়ে উঠছে ইলেক্টোরাল ভোটের হিসাব-নিকাশ। কারণ, চূড়ান্ত ফলাফলে, মোট ভোট সংখ্যা নয়; মুখ্য এ ইলেক্টোরাল ভোট। ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কমলা হ্যারিস দুই প্রার্থীই তাই জোর দিচ্ছেন, সুইং স্টেটগুলোর ইলেক্টোরাল ভোট নিশ্চিত করার ওপরে।
২০১৬ সালের নির্বাচনে ডেমোক্রেট প্রার্থী হিলারি ক্লিংটনের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ ভোট কম পেয়েও প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছিলেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর আগেও জর্জ ডব্লিউ বুশসহ আরও চারজন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে কম ভোট পেয়ে। এর কারণ যুক্তরাষ্ট্রের জটিল নির্বাচনী পদ্ধতি। যুক্তরাষ্ট্রে এবার ভোটার সংখ্যা প্রায় ২৫ কোটি। যদিও ফলাফলের ক্ষেত্রে মোট ভোট সংখ্যা বা পপুলার ভোটের তেমন কোনো গুরুত্ব নেই। প্রার্থীর ভাগ্য নির্ধারিত হয় ইলেক্টোরাল কলেজ পদ্ধতিতে।
জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৫০ অঙ্গরাজ্যে ৫৩৮টি ইলেক্টোরাল ভোট রয়েছে। বেশি জনবহুল হওয়ার স্বাভাবকিভাবেই ক্যালিফোর্নিয়া, টেক্সাস, ফ্লোরিডা, নিউইয়র্কের মতো অঙ্গরাজ্যে সবচেয়ে বেশি ইলেক্টোরাল ভোট। তবে ৫৩৮ সদস্যের ইলেক্টোরাল কলেজে নিজস্ব কোনো ক্ষমতা নেই। আইন অনুসারে কোনো অঙ্গরাজ্যে যে প্রার্থী বেশি ভোট পাবেন সে ওই অঙ্গরাজ্যের সবগুলো ইলেক্টোরাল ভোট পেয়ে যাবেন। আর এই বিধানের কারণেই মোট ভোট বেশি পেলেও ইলেক্টোরাল ভোট কম পাওয়ার নজির আছে আমেরিকায়।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন কমপক্ষে ২৭০টি ইলেক্টোরাল ভোট। ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত রাজ্যগুলোতে প্রায় দেড়শ করে ভোট নিশ্চিত থাকে দুই দলেরই। মূলত লড়াই চলে বাকি ১২০-১৩০টি ভোটের জন্য। দোদুল্যমান থাকা টেক্সাস, ফ্লোরিডা, পেনসিলভানিয়া, ওহাইওর মতো ১০-১২টি অঙ্গরাজ্য। মার্কিনিদের কাছে যেগুলো পরিচিত সুইং স্টেটস বা দোদুল্যমান নামে।
জনমত জরিপ বলছে, শেষ মুহূর্তে সুইং স্টেটসগুলোতে কমলা হ্যারিসের চেয়ে কিছুটা বেশি এগিয়ে গতবার বাইডেনের কাছে হেরে যাওয়া ট্রাম্প। স্বাভাবকিভাবেই প্রচারণায় সুইং স্টেটসগুলোকেই বেশি গুরুত্ব দেন প্রার্থীরা। শক্ত ঘাঁটিগুলোতে ভোটের ব্যবধান বাড়ানোর চেয়ে প্রাধান্য পায় ফল নির্ধারণী রাজ্যগুলোতে সামান্য ব্যবধানে হলেও জয় নিশ্চিত করা।