আন্দোলনরত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নিজ শিক্ষাঙ্গনে ফিরে যেতে অনুরোধ করেছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ।
বুধবার (৩০ অক্টোবর) এক বিবৃতিতে তিনি এ অনুরোধ জানান। বিবৃতিতে শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পর থেকেই বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছাত্ররা এবং বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন নানা দাবি নিয়ে আন্দোলন করে যাচ্ছেন।
একটি সম্পূর্ণ বিশৃঙ্খল অবস্থায় পাওয়া শিক্ষাখাতে শৃঙ্খলা ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য সরকার যথাসাধ্য চেষ্টা করছে। খবর বাসসের।
ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, এ সকল দাবি-দাওয়ার মধ্যে ন্যায্য-অন্যায্য এবং কিছুক্ষেত্রে পরস্পরবিরোধী দাবিও আছে। একটি বৈষম্যবিরোধী দাবি মানলে অন্যান্য ক্ষেত্রে বৈষম্য তৈরি হতে পারে।
উপদেষ্টা বলেন, শিক্ষাখাতের যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ সংস্কারের দাবিপূরণের সুদূর প্রসারী প্রভাব থাকে এবং এর জন্য তাৎক্ষণিক সমাধান দেওয়া কঠিন, অথচ এসব দাবির পেছনের আন্দোলনকারীরা তাদের দাবিকেই সবচেয়ে অগ্রাধিকার হিসেবে দেখছেন এবং দাবিগুলোকে শুধু রাস্তায় আন্দোলন করে তাৎক্ষণিক সমাধানযোগ্য মনে করছেন।
তিনি বলেন, এতে একদিকে যেমন রাস্তা অবরোধের ফলে সাধারণ মানুষের অপরিসীম জনদুর্ভোগ হচ্ছে, সরকারও দাবিগুলো যথাযথ বিবেচনার সুযোগ পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি বিবেচনার জন্য সরকার ইতোমধ্যেই সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেছে যা সাত সপ্তাহের মধ্যে দ্রুত একটি প্রতিবেদন তৈরি করবে।
শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, সমস্যাটির শুরু হয়েছে কয়েক বছর আগে ঢাকার ৭টি কলেজকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতা থেকে বের করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অন্তর্ভুক্ত করার একটি অবিবেচনাপ্রসূত সিদ্ধান্তের মাধ্যমে।
উপদেষ্টা বলেন, এর ফলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সাত কলেজের উভয় পক্ষেরই সমস্যা তৈরি হয়েছে। যে কারণে ওই সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের নানা অসুবিধা ও বৈষম্যের শিকার হতে হয়েছে। সমস্যাগুলো জটিল এবং এগুলোর সুষ্ঠু সমাধান কী হতে পারে তা বিবেচনায় ন্যূনতম কিছু সময়ের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, এরই মধ্যে একটি কলেজের শিক্ষার্থীরা নিজেদের প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে বিশ্ববিদ্যালয় করার দাবি নিয়ে রাস্তায় আন্দোলন করেছেন। ইতোমধ্যে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনাও হয়েছে।
উপদেষ্টা বলেন, দেশের সমস্যাসঙ্কুল শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবির প্রতি একজন শিক্ষক হিসেবে অবশ্যই ব্যক্তিগতভাবে আমার সার্বিক সহানুভূতি আছে।
তিনি আরও বলেন, এক্ষেত্রে মনে রাখতে হবে রাস্তায় শিক্ষার্থীদের অবরোধ, আন্দোলন ও আলটিমেটামের মাধ্যমে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত দেওয়ার কোন নজির কোথাও নেই।