রাজধানীর সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজ ও সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ দুই ঘণ্টায়ও থামেনি। স্বাভাবিকভাবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়ে কাঁদানে গ্যাস এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়েছে পুলিশ।
বুধবার (২০ নভেম্বর) দুপুরে এ সংঘর্ষ শুরু হয়। এতে সায়েন্সল্যাব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সিটি কলেজ ও ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে থেমে থেমে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুঁড়ে। পরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ এবং সেনা সদস্যকে ঢাকা কলেজের দিকে যেতে দেখা গেছে। ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এখন মুখোমুখি অবস্থানে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ পুলিশ ও সেনাসদস্যরা ঢাকা কলেজের ভিতরে ঢুকে অডিটোরিয়ামের দরজা ভাঙচুর করে।পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের এলোপাতাড়ি মারধর করে। এতে অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আহত শিক্ষার্থীদের ঢাকা কলেজের বাসে করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয়েছে।
নিউমার্কেট অঞ্চলের দায়িত্বে থাকা পুলিশের সহকারী কমিশনার শাহ মোস্তফা তারিকুজ্জামান বলেন, মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) সায়েন্সল্যাব এলাকায় ঢাকা কলেজের ছাত্রদের একটি বাসে ওঠাকে কেন্দ্র করে সিটি কলেজের কয়েকজন শিক্ষার্থীর মধ্যে হাতাহাতি হয়। এর জের ধরে সকালে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা গিয়ে সিটি কলেজে ভাঙচুর চালায়। এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে বিকেলে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা রাস্তায় বেরিয়ে আসেন। তারা সায়েন্সল্যাবের দিকে এগোয়। তখন ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা বেরিয়ে এসে সায়েন্সল্যাবের কাছাকাছি অবস্থান নেয়। একপর্যায়ে দুপক্ষ ইটপাটকেল ছুড়ে। সংঘর্ষে জড়ায়।
এ বিষয়ে ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক এ কে এম ইলিয়াস বলেন, পরিস্থিতি এখন শান্ত আছে। বেশ কিছু শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। আমরা সন্ধ্যার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানিয়ে দিবো।
এর আগে দুপুরে সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে সড়ক অবরোধ করেন। এ সময় ঢাকা কলেজের বাস যেতে তারা বাধা দেন এবং সিটি কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা কলেজের ‘শঙ্খনীল’ নামে একটি বাস ভাঙচুর করে। এর পরপরই ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিক্রিয়া জানিয়ে সায়েন্সল্যাবে গেলে তাদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।
এ ঘটনায় দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয় এবং সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনার পরপরই পুলিশ এবং সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।
এরও আগে ২৮ অক্টোবর সিটি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং উপাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ ৭ দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কলেজটির শিক্ষার্থীরা। পরে ছাত্র আন্দোলন ঠেকাতে দীর্ঘ ২০ দিন বন্ধ রাখেন কলেজ কর্তৃপক্ষ। এর পর ১৯ নভেম্বর কলেজের একাডেমিক কার্যক্রম চালু হয়। শনিবার (১৬ নভেম্বর) কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক কাজী নেয়ামুল হকের সই করা বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়।