শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ০৫:০৪ অপরাহ্ন
সংবাদ শিরোনাম :
‘আ.লীগের মিছিল পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে ব্যবস্থা’ ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বৈঠকে এনসিপি আ.লীগের মতো স্বৈরাচারী দলে সাকিবের যাওয়া ঠিক হয়নি : প্রেস সচিব রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে আরাকান আর্মি বড় সমস্যা : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা যুদ্ধবিরতিতে ফিলিস্তিনিদের ‘না’, প্রস্তাবে যা বলেছে ইসরায়েল বাংলাদেশের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে : পাকিস্তানের পররাষ্ট্রসচিব নির্বাচনের কমিটমেন্ট ঠিক থাকবে কি না আল্লাহই জানেন: জামায়াত আমির সুনির্দিষ্ট কোনো রোডম্যাপ না পাওয়ায় অসন্তুষ্ট বিএনপি : মির্জা ফখরুল অচিরেই বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় বাস্তবায়ন হবে : প্রধান বিচারপতি দীর্ঘ ১৫ বছর পর বৈঠকে বসছে বাংলাদেশ-পাকিস্তান

সংস্কারের পথে হাঁটছে বাশারবিহীন সিরিয়া

  • আপডেট এর সময় : শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
  • ৮৬ বার পঠিত হয়েছে

মাত্র ১২ দিনের ‘ঝড়ে’ স্বৈরাচার বাশার আল আসাদ সরকারের দুই যুগের শাসনের অবসানের পর সিরিয়া যেন এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত এক দেশ। যে দেশের আনাচকানাচে বাশার বাহিনীর নির্যাতন কেন্দ্রগুলোতে গুম হওয়া স্বজনদের খোঁজে এখনো ভিড় করছেন হাজারো মানুষ। শুধু সিরিয়া নয়, সারা বিশ্বের মানুষই হতবাক হয়ে পড়ছেন দেশটির কুখ্যাত কারাগারগুলোতে হওয়া নির্মম নির্যাতনের কাহিনি শুনে। গৃহযুদ্ধে প্রতিটি রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানই বেশ ভঙ্গুর অবস্থায়। তবে এ অবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে চায় সিরিয়া। নেওয়া হয়েছে প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারের বেশ কিছু উদ্যোগ। আগের সরকারের নিরাপত্তা বাহিনী ভেঙে দেওয়া এবং সেই কুখ্যাত কারাগারগুলো বন্ধ করে দেওয়ার ঘোষণা এসেছে। পুলিশ বাহিনীতে নতুন করে নিয়োগ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। নেওয়া হয়েছে সংবিধান সংস্কারের উদ্যোগও। দেশটির জনগণ বলছেন, তারা আবার নতুন করে গড়ে তুলতে চান তাদের প্রিয় মাতৃভূমি।

বিশ্বের যে কোনো দেশেই স্বৈরাচারের পতনের পর আবার নতুন করে দেশ গঠনের একটি তোড়জোড় শুরু হয়। কথা বলার স্বাধীনতা ফিরে পাওয়ায় জনআকাঙ্ক্ষার যেন বিস্ফোরণ ঘটে। সিরিয়ায়ও এখন সেরকম অবস্থা। বাশার আল আসাদের দীর্ঘ ২৪ বছরের দুঃশাসন বিশেষ করে ২০১১ সালে শুরু হওয়া গৃহযুদ্ধের পর থেকে দেশটি যেন নরকে পরিণত হয়েছে। সেই নরকের অবসান ঘটাতে সিরিয়ার নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সেই সময় থেকে লড়াই করে আসছে বিদ্রোহী বাহিনী। মাঝে কিছুদিন সেই লড়াই অনেকটা ঝিমিয়ে পড়লেও সম্প্রতি আবার আকস্মিকভাবে মাথাচাড়া দেয়। আর এরই ধারাবাহিকতায় মাত্র ১২ দিনের অভিযানে একের পর এক শহরের দখল নিয়ে রাজধানী দামেস্কের দিকে অগ্রসর হয় বিদ্রোহী বাহিনী। অভিযানের নায়ক আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির নেতৃত্বাধীন হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) বিনা বাধায় দামেস্ক দখল করলে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান দেশটির দোর্দণ্ডপ্রতাপশালী শাসক বাশার আল আসাদ। সেই ১৯৭১ সাল থেকে দেশটি শাসন করছে বাশার পরিবার। বাশারের বাবা প্রেসিডেন্ট হাফিজ আল আসাদ ২০০০ সালে মারা যাওয়ার পর মাত্র ৩৪ বছর বয়সে দেশের হাল ধরেন বাশার। শুরুতে বিলেতফেরত বাশার বেশ ভালোভাবে চালিয়ে গেলেও পরে ক্ষমতার মোহ যেন পেয়ে বসে তাকে। কেড়ে নিতে শুরু করেন বিরোধীদের কথা বলার অধিকার। সরকারের বিরুদ্ধে যারাই কথা বলত, তাদেরই ধরে নিয়ে এসে ঢোকানো হতো কারাগারে। কারাগারগুলো পরিণত হয় এক ধরনের নির্যাতন কেন্দ্রে। ২০১১ সালে আসাদ সরকারের বিরুদ্ধে বড় ধরনের প্রতিবাদ প্রতিরোধ শুরু হলে কঠোরভাবে তা দমন করা হয়, যার ফলে শুরু হয় গৃহযুদ্ধ। এ গৃহযুদ্ধে মারা যায় ৫ লাখ মানুষ। ঘরবাড়ি হারিয়ে শরণার্থী হয় ৬০ লাখ মানুষ, যাদের অনেকেই এখন বিভিন্ন দেশ থেকে ফিরতে শুরু করেছেন। রাশিয়া ও ইরানের সহায়তায় বাশার এতদিন ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে পারলেও শেষ পর্যন্ত জনতার জয়ই যে অবধারিত, তা তার পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হলো।

পোস্টটি আপনার স্যোসাল মিডিয়ায় শেয়ার করুন

এই বিভাগের আরো সংবাদ