গাজায় বছরের বেশি সময় ধরে হামলা চালিয়ে আসছে ইসরায়েল। দেশটির এ হামলায় গাজায় ৪৩ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। তবে ফিলিস্তিনিদের প্রতিরোধের মুখে কঠিন পরিণতিও ভোগ করতে হয়েছে ইসরায়েলি সেনাদের। দীর্ঘ এ যুদ্ধে ইসরায়েলের নিহত সেনার সংখ্যা জানিয়েছে ইসরায়েল।
বুধবার ( ২০ নভেম্বর) আনাদোলু এজেন্সির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইসরায়েলের সেনাবাহিনী জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের আরও এক সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর কফির ব্রিগেডের সদস্য ছিলেন। তবে তার মৃত্যুর বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানানো হয়নি। এ ছাড়া ইসরায়েলে আরও এক সেনা গুরুতর আহত হয়েছেন বলেও জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
সেনাবাহিনীর তথ্যানুসারে, গাজায় এ পর্যন্ত ইসরায়েলের অন্তত ৮০০ সেনা নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েজেন আরও অন্তত পাঁচ হাজার ৩৮১ জন। গত ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এসব সেনারা হতাহত হন।
অন্যদিকে ইসরায়েলের হামলায় গাজায় ৪৪ হাজার ৪০০ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আহত হয়েছেন আরও অন্তত এক লাখ চার হাজার জন আহত হয়েছেন। নিহতদের বেশির ভাগ নারী ও শিশু।
উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় সৃষ্ট ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার করতে অন্তত ১৫ বছর সময় লাগবে। এ জন্য প্রতিদিন ১০০টি লরি ব্যবহার করতে হবে। জাতিসংঘের হিসাবমতে, গাজায় ভবন ধসে এ পর্যন্ত ৪২ মিলিয়ন টনেরও বেশি ধ্বংসস্তূপ জমা হয়েছে। এ ধ্বংসস্তূপগুলো যদি একসঙ্গে এক জায়গায় রাখা যায়, তাহলে তা মিসরের ১১টি গ্রেট পিরামিডের সমান হবে। এ ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যয় হবে ৫০০ থেকে ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি)।
ইউএন এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রামের হিসাব অনুসারে, গাজায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ২৯৭টি ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, যা অঞ্চলটির মোট ভবনের অর্ধেকের বেশি। ক্ষতিগ্রস্ত ভবনের মধ্যে এক-চতুর্থাংশ পুরোপুরি বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। এ ছাড়া এক-দশমাংশ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং এক-তৃতীয়াংশ বেশ খানিকটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব ভবনের ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে ফেলার জন্য ২৫০ থেকে ৫০০ হেক্টর জমির প্রয়োজন পড়বে
গাজাভিত্তিক জাতিসংঘের একজন কর্মকর্তা গার্ডিয়ানকে বলেন, ‘অবকাঠামোর যে পরিমাণ ক্ষতি করা হয়েছে, তা পাগলামির পর্যায়ে পড়ে… দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসে একটি ভবনও নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকৃত অর্থেই এ অঞ্চলের ভৌগোলিক চিত্র পরিবর্তিত হয়ে গেছে। যেখানে আগে পাহাড় ছিল না, এখন সেখানে পাহাড় হয়ে গেছে। দুই হাজার পাউন্ডের বোমাগুলো আক্ষরিক অর্থেই এ অঞ্চলের মানচিত্র বদলে দিয়েছে।’