রাজধানীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দেওয়ায় সড়ক অবরোধ করেছেন চালকরা। এতে এসব এলাকায় তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
একই সঙ্গে মহাখালীতে রেললাইন অবরোধ করেন চালকরা। এ অবস্থায় তাদের সরিয়ে দিতে রাস্তায় নেমেছে সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার (২১ নভেম্বর) দুপুরে মহাখালীতে সড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করা অটোরিকশা চালকদের ধাওয়া দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা। পাল্টা জবাবে আন্দোলনকারীরাও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এ ঘটনায় সেখানে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
জানা যায়, অটোরিকশা চালকরা মহাখালী লেভেল ক্রসিং এলাকায় অবস্থান নিয়ে আন্দোলন করছেন। ফলে তীব্র যানজট দেখা যায়। তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বললে তারা উল্টো পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোড়ে।
এ অবস্থায় তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দিতে সেনাবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া দেন। এতে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে এদিক-ওদিকে ছুটে যান। পরে তাদের রেলগেটের পাশের সড়কে অবস্থান নিতে দেখা গেছে।
অন্যদিকে, মিরপুর-১০ নম্বর গোলচত্বরে অবস্থান নেওয়া রিকশা চালকদের ধাওয়া দেয় সেনাবাহিনী।
বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা থেকে থেকে আগারগাঁও, কল্যাণপুর, গাবতলী, টেকনিক্যাল, মহাখালী, মোহাম্মদপুর, পল্লবী, ডেমরা এলাকায় অটোরিকশা চালকরা সড়ক বন্ধ করে দেন।
এর আগে বুধবারও (২০ নভেম্বর) রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন রিকশা চালকরা। রাজধানীর মহাখালীতে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছেন ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকরা।
মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) আগামী তিন দিনের মধ্যে রাজধানী ঢাকা মহানগরীতে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
একইসঙ্গে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সানজিদ সিদ্দিকী ও তাহসিনা মৃদু।
তথ্য বলছে, রাজধানী ঢাকার সড়কে অবৈধভাবে চলছে প্রায় ৮ লাখ ব্যাটারিচালিত রিকশা। প্রধান সড়কে আসার অনুমতি না থাকলেও দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অবৈধ এ যান। গত দু’মাসে লক্ষাধিক ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হলেও দৌরাত্ম্য থামছে না।
চলতি বছরের ১৫ মে সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধের ঘোষণা দেয় সড়ক ও পরিবহন মন্ত্রণালয়। এরপর আন্দোলনে নামে রিকশা চালকরা। এর ৫ দিন পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মূল সড়ক ছাড়া রিকশা চলাচলের অনুমতি দেন। তবে সেটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গিয়ে চলাচল শুরু হয় মূল সড়কেও।
এরপর ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর এটি ভয়ংকর রূপধারণ করে। ঢাকা অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন বলছে, সড়কে এখন চলছে অন্তত ৮ লাখ অটোরিকশা।
এদিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেপ্টেম্বর মাসে ৫০ হাজার, আর অক্টোবর মাসে ৬৬ হাজার এসব রিকশার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ। ব্যাটারি জব্দ করে নিলামেও তোলা হয়েছে।